ভেরিকোসিল (Varicocele) কি এর লক্ষণ এবং চিকিৎসা
ভেরিকোসিল (Varicocele) |
আমাদের প্রায় সবার মনেই এমন একটা ধারনা কাজ করে যে অন্ডথলিতে একটা কিছু ফুলে উঠাটাই বোধহয় হার্নিয়া, আর হার্নিয়া যদি নাই হয় তবে তো সেটা হাইড্রোসিল হবেই।
আসলে এ দুটোর বাইরে অন্য রোগেও অন্ডথলি ফুলে উঠতে পারে, তেমনই একটা রোগ হলো ভেরিকোসিল (Varicocele)। অন্ডকোষ থেকে যে সকল শিরার মাধ্যমে রক্তপ্রবাহ অপেক্ষাকৃত বড় শিরায় ধাবিত হয় সেই শিরাগুলো বড় হয়ে মোটা হয়ে গিয়েই অন্ডথলিকে ফুলিয়ে তোলে এবং এর নামই ভেরিকোসিল।
যে সকল পুরুষ অধিক কামাশক্ত অথবা যারা অত্যধিক হস্তমৈথুন করে তারা যদি হঠাত এই অভ্যাস ছেড়ে দেয় কিন্তু কাম চিন্তা ত্যাগ করতে না পারলে এপিডিডায়মিসের উপর দিকে স্পার্মাটিক কর্ড এর মধ্যে বীর্য ধীরে ধীরে সঞ্চিত হয়ে স্ফীত হয়ে উঠে।
ইহাতে কোষ উপর দিকে আকৃষ্ট হয়, স্ফীত হয় এবং স্পর্শ করলে, দাড়ালে বা হাটাচলা করলে বেদনার উদ্রক হয়।
লিঙ্গ অর্ধবক্র হয়, এই অবস্থায় কিছুক্ষণ বা কিছুদিন থাকার পর ধীরে ধীরে ঐ স্ফীত ভাব কমে আসে এবং কখনো আবার বৃদ্ধিও পেতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত ভেরিকোসিলে পরিনত হয়।
ইহার ফলে পুরুষাঙ্গ কখনো শক্ত ও সোজা হয়, কখনো বা বাকা হয়ে থাকে এবং এটা রাত্রেই বেশি হতে দেখা যায়। ইহাতে রোগী অনেক যন্ত্রনাও ভোগ করে থাকে।
ভেরিকোসিল (Varicocele) |
ভেরিকোসিল (Varicocele) এর অত্যন্ত কার্যকরী এবং আরোগ্যকারী হোমিও চিকিত্সা রয়েছে।
একজন ভালো হোমিওপ্যাথ রোগীর সবগুলি লক্ষণ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে সঠিক ঔষধ নির্বাচন পূর্বক যথাযথ ট্রিটমেন্ট দিলেই ভেরিকোসিল অনায়সে নির্মূল হয়ে যাবে।
তবে এই সময় উগ্র মসলা যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা উচিত নয়। হালকা অথচ পুষ্টিকর খাদ্যই গ্রহণ করা শ্রেয়। কোনো প্রকার মদ্য পান বা উগ্র নেশা করা অনুচিত। সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন জামা কাপড় ব্যবহার করতে হবে। রাত্রি জাগরণ এবং অসৎ সঙ্গে মেলামেশা করা আদৌ উচিত নয়।
ভেরিকোসিল কারন ও লক্ষণ :
ভেরিকোসিল (Varicocele) পুরুষের একটি যৌনরোগ।
এ রোগে কোনো কোনো ক্ষেত্রে যন্ত্রণা অনুভূত হয় না।
আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভয়াবহ যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়।
এক ধরনের টানাহেঁচড়ার মতো ব্যথা কোমর থেকে প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ব্যথা হাঁটাচলা করলে, দাঁড়ালে এবং গরমকালে বেশি অনুভূত হয়।
যেসব পুরুষ বেশি কামাশক্ত বা যারা বেশি হস্তমৈথুন করে,
তারা যদি হঠাৎ এ অভ্যাস ত্যাগ করে,
কিন্তু কামচিন্তা ত্যাগ না করে,
তা হলে এপিডিডায়মিসের ওপর দিকে স্পার্মাটিক কর্ডের মধ্যে বীর্য ক্রমে সঞ্চিত হয়ে স্ফীত হয়ে ওঠে।
এতে কোষ ওপর দিকে আকৃষ্ট হয়, স্ফীত হয় এবং স্পর্শ করলে, দাঁড়ালে বা হাঁটাচলা করলে ব্যথা হয়।
এ অবস্থায় কিছুক্ষণ বা কিছুদিন থাকার পর ক্রমে ওই স্ফীত ভাব কমে আসে এবং কখনো আবার বৃদ্ধিও পেতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত ভেরিকোসিলে পরিণত হয়।
এতে পুরুষাঙ্গ কখনো শক্ত ও সোজা হয়, কখনো বাঁকা হয়ে থাকে এবং এটা রাতে বেশি হতে দেখা যায়।
এতে রোগী বেশি যন্ত্রণা ভোগ করে।
ভেরিকোসিল রোগের অত্যন্ত কার্যকরী এবং আরোগ্যকারী হোমিও চিকিৎসা রয়েছে। অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথ ডাক্তার রোগীর সব লক্ষণ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে সঠিক ওষুধ নির্বাচন করে যথাযথ চিকিৎসা করলে রোগটি নির্মূল হয়ে যাবে। চিকিৎসক এ সময় খাবার-দাবার ব্যাপারেও বিধি-নিষেধ জানিয়ে দেবেন।
ভেরিকোসিল রোগীদের ৯৫ ভাগ বাম পাশ্বে আক্রন্ত হয় আর ৫ ভাগ ডান পাশ্বে আক্রান্ত হয়।
ভেরিকোসিল রোগের লক্ষণ:
অণ্ডকোষে ব্যথা হওয়া (Pain in testicles)
অণ্ডথলিতে চাকা/পিণ্ড (Mass in scrotum)
কুঁচকিতে ব্যথা (Groin pain)
অণ্ডথলি বা অণ্ডকোষ ফুলে যাওয়া (Swelling of scrotum)
বন্ধ্যাত্ব (Infertility)
তলপেটে ব্যথা (Lower abdominal pain)
অনৈচ্ছিক মূত্রত্যাগ (Involuntary urination)
পুরুষত্বহীনতা (Impotence) ত্বকের বৃদ্ধি (Skin growth)
পুরুষাঙ্গে ব্যথা হওয়া (Penis pain)
পায়ুপথে ব্যথা হওয়া (Pain of the anus)
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি ?
ভ্যারিকোসিলে সাধারণত দেখতে পাওয়া লক্ষণ ও উপসর্গগুলি হলঃ
অস্বস্তি সৃষ্টি।
মৃদু ব্যথা।
স্ক্রটামের শিরার বৃদ্ধি বা মচকে যাওয়া।
ব্যথা বিহীন টেস্টিকুলার লাম্প।
স্ক্রটাল ফুলে যাওয়া বা স্ফিত হওয়া।
বন্ধ্যাত্ব।
শুক্রানুর সংখ্যা কম হওয়া।
বিরলভাবে- কোন উপসর্গ দেখা যায় না।
এর প্রধান কারণগুলি :
ভ্যারিকোসিলে প্রধানত শিরার ভাল্বটি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার জন্য স্পারমেটিক কর্ডের সাথে অল্প রক্ত সঞ্চালিত হয়,যার ফলে শিরাটি ফুলে যায় ও বড় হয়ে যায়। কিডনিতে টিউমারের মতো অবস্থা দেখা দিলেও শিরায় রক্ত প্রাবাহিত হওয়ার সময় বাধা সৃষ্টি হয়।
কিভাবে এর নির্ণয় করা হয়:
চিকিৎসক উপসর্গগুলির সম্পূর্ণ ইতিহাস গ্রহন করেন ও কুঁচকির অঞ্চলটি ভালোভাবে পরীক্ষা করেন, যার মধ্যে রয়েছে স্ক্রটাম এবং টেষ্টিকেল, এবং দেখেন যে স্পারমেটিক কর্ডএ কোনও পাকানো শিরা আছে কিনা। এক্ষত্রে নীচে শুয়ে থাকা অবস্থায়,এটি দেখা যায় না। আবার, পরীক্ষার সময় টেস্টিক্যালের প্রতিটি সাইড আলাদাভাবে দেখা হয় কারণ দুদিকের টেষ্টিকেলের মাপ আলাদা হয়।
ভেরিকোসিল রোগের ডায়াগনোসিস প্যাথলজী পরীক্ষা
Usg of Scrotum
ঔষধ সমূহ:
ফেরাম পিক্রিক, পালসেটিলা, বেলেডোনা, ক্যাল্কেরিয়া কার্ব, এগনাস ক্যাকটাস, একোনাইট ন্যাপ, আর্ণিকা, হ্যামামেলিস, ল্যাকেসিস, নাক্সভম, প্লাম্বাম, রুটা, সালফার, লাইকোপডিয়াম, অ্যাসিড ফস, বেলিসপিরিনিস।
No comments:
Post a Comment